বস্ত্র উৎপাদনে বাংলাদেশের রয়েছে গৌরবময় ঐতিহ্য । মধ্য যুগে বাংলা মসলিনের জন্য বিখ্যাত ছিল। মসলিন শাড়ী তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় তুলা চাষ করা হতো ঢাকার আশেপাশের উঁচু জমিতে যেখানে বেশীর ভাগ তাঁত শিল্প গড়ে উঠেছিল। বস্তুতঃ ব্রিটিশ শাসনামলে মসলিনের উৎপাদন এবং ব্যবসা ক্রমান্বয়ে কমে যায়। যার ফলে ঊনিশ শতকের শুরুর দিকে তাঁত কলগুলি বন্ধ হয়ে যায়। পাকিস্তান শাসনামলে এ দেশে তুলা উৎপাদনের প্রচেষ্টা ছিল খুব সীমিত। স্বাধীনতার আগে স্থানীয় বস্ত্র কলের জন্য কাঁচামালের যোগান দেয়া হতো পশ্চিম পাকিস্তান থেকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তান কাঁচামাল সরবরাহ বন্ধ করে দিলে স্থানীয়ভাবে তুলার উৎপাদনের গুরুত্ব অনুভূত হয়। এসময় আমাদের বস্ত্র শিল্পগুলো কাঁচামালের অভাবে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। এই অবস্থায় ১৯৭২ সালে দেশে তুলার চাষ সম্প্রসারণ করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে তুলা উন্নয়ন বোর্ড গঠিত হয়। তুলা উন্নয়ন বোর্ড ১৯৭৪-৭৫ সালে মাঠ পর্যায়ে আমেরিকান আপল্যান্ড তুলা দিয়ে পরীক্ষামূলক তুলার চাষ শুরু করে। ১৯৭৬-৭৭ সালে আমেরিকা হতে নতুন তুলার জাত প্রবর্তনের মাধ্যমে দেশে কৃষক পর্যায়ে তুলা চাষ শুরু হয়। ১৯৯১ সালে তুলা গবেষণার দায়িত্ব বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নিকট ন্যাস্ত করা হয়। তখন থেকে তুলা গবেষনা ও সম্প্রসারনের কার্যক্রম তুলা উন্নয়ন বোর্ড পরিচালনা করে আসছে। তুলা গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫টি তুলা গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও বীজ বর্ধন খামার প্রতিষ্ঠা করা হয়। তন্মধ্যে ১৯৮৪ সালে ঢাকা- ময়মনসিংহ মহাসড়কের পার্শ্বে ১৫০ হেক্টর জমির উপরে প্রতিষ্ঠিত হয় তুলা গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও বীজ বর্ধন খামার শ্রীপুর, গাজীপুর।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস